
নারী পুরুষের পূর্বনির্ধারিত ভূমিকা
নারীবাদের ধোঁকাবাজিতে নিমজ্জিত আধুনিক সমাজ নারীর পরিচয় ভুলে গিয়েছে।
আমরা নারীরাও এখন “নারী” হওয়ার আসল অর্থ বুঝিনা।
আমরা নারীত্বের ফিতরাহ হারিয়ে ফেলেছি। আমাদের সহজাত গুনাগুন এবং অনন্যতা হারিয়ে ফেলেছি ৷ পুরুষের সমান হওয়ার প্রতিযোগিতায় অবুঝের মতো আপন নারীত্ব ত্যাগ করে বসে আছি ৷
গোঁড়া থেকেই নারী পুরুষ অনেক আলাদা ৷ এটা তো খারাপ না
এখানে লজ্জার কিছু নেই
! এটাকে দোষের মনে করার কিছু নেই! এটা থেকে দূরে সরে আসারও কোনো কারণ নেই!
বরং, এটাই সহজাত।
এটাই প্রাকৃতিক।
এটাই সুন্দর। নারী পুরুষের সমন্বয়ে আসে বৈচিত্রতা।
কিছু ক্ষেত্রে নারী পুরুষের মিল আছে। আর যেসব ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে অমিল, সেগুলোই তাদের একে অপরের মধ্যে আকর্ষণ ঘটায় ৷ কঠিন এবং কোমল। অদম্য এবং নমনীয় ৷ রক্ষাকারী এবং সুরক্ষিত।
আল্লহ সব সৃষ্টি জোড়ায় জোড়ায় তৈরী করেছেন ৷
অনেক ক্ষেত্রে জোড়ায় একে অপরের বৈশিষ্ট্যসমূহ বিপরীত। একটা অন্যটার চেয়ে কম না, বেশিও না ৷ তারা ভিন্নধর্মী।
সূরা আল-লাইলের শুরুতে আল্লহ বলেন:
وَٱلَّيْلِ إِذَا يَغْشَىٰ. وَٱلنَّهَارِ إِذَا تَجَلَّىٰ. وَمَا خَلَقَ ٱلذَّكَرَ وَٱلْأُنثَىٰٓ. إِنَّ سَعْيَكُم لَشَتَّىٰ.
“শপথ রাতের, যখন তা আচ্ছন্ন করে। এবং দিনের, যখন তা উদ্ভাসিত হয়। এবং সেই সত্তার যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন। বস্তুত তোমাদের প্রচেষ্টা ভিন্ন রকমের।”
সূরা ফাজরের শুরুতে আল্লহ অত্যন্ত চমকপ্রদ এবং চিন্তাকর্ষক শপথ নেন:
وَٱلْفَجْرِ . وَلَيَالٍ عَشْرٍ. وَٱلشَّفْعِ وَٱلْوَتْرِ…
“শপথ ঊষার। এবং দশ রাতের। এবং জোড় ও বেজোড়ের।….”
মুফাসসিরগণের বিশ্লেষণ মতে, এখানে “জোড় ও বেজোড়” এর অন্যতম অর্থ হলো: আল্লহ সবকিছু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন।
আকাশ ও পৃথিবী।
দিন ও রাত।
সূর্য ও চাঁদ।
ভূমি ও সমুদ্র।
পুরুষ ও নারী।
এগুলো সব জোড়ায় আছে ৷ একমাত্র বেজোড় হলেন স্বয়ং আল্লহ। আল্লহ এক ও অদ্বিতীয়। স্রষ্টা বনাম সৃষ্টি ৷ স্রষ্টা আর সৃষ্টির কখনো তুলনা হবেনা। সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য হলো তারা থাকে জোড়ায় জোড়ায়। তারা বিপরীতমুখী বা বিপরীতধর্মী কিন্তু একে অপরের সম্পূরক।
আমাদের এটা নিয়ে গভীর চিন্তা করা উচিত। আকাশকে কি পৃথিবীর তুলনায় বৈশিষ্ট্যে নগন্য বলা যায়? নাকি পৃথিবী আকাশের তুলনায় নগন্য? সমুদ্র কি কখনো ভূমির মতো হতে পারে? বা ভূমি সমুদ্রের মতো? সূর্যের বৈশিষ্ট্য কি কখনো চাঁদের মতো হয়ে যায়?
তাহলে কেন আমরা নারী এবং পুরুষকে একই মাপকাঠিতে ফেলার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাই?
এটা কি বোকামি ছাড়া আর কিছু?
আচ্ছা ধরেন একজন নারীর চাকরি করার যোগ্যতা আছে। সে উপার্জন করতে সক্ষম। অর্থাৎ তার নিজেকে চালানোর মতো সক্ষমতা আছে। সে স্বামী ছাড়াই দুনিয়ায় টিকে থাকতে পারবে৷
এরকম কি সম্ভব? হ্যাঁ, অবশ্যই সম্ভব।
কিন্তু এরকম জীবন কি তাকে প্রকৃত সুখ এবং পরিপূর্ণতা দিবে? না, কখনোই না।
সত্যিকার অর্থে, নারী চায় একজন শক্ত-সামর্থ্য, প্রেমময় পুরুষ যে তার যত্ন নিবে এবং তাকে নিরাপত্তা দিবে। নির্মম কঠিন এই দুনিয়ায় নারী কখোনও কারো সাহায্য ছাড়া একা থাকতে চায় না৷ নারীবাদের “শক্তি” ও “স্বাধীনতা”র বুলি নারীকে দুর্বিষহ করে তোলে। এটা নারীকে খুশি করেনা বরং পুরুষকে খুশি করে ৷ নারী পুরুষের পার্থক্যকে স্বীকার না করার পরিণতি এটাই ৷
পুরুষের ক্ষেত্রে যা খাটে, নারীর ক্ষেত্রে তা খাটেনা ৷ কিন্তু একগুঁয়ে নারীবাদীরা তা স্বীকার করতে চায়না।


